লৈখিক কথপোকথন প্রকাশিত হয়েছে

তোমায় ভালোবাসি

ছবি
তোমার জন্য নেশা আজ বেশি করে ধরেছে- চোখে স্বপ্ন এঁকেছি শুধু তোমার আবেগে ভেসে কোন কাজে মন বসে না, রাতে ঘুম আসে না, তোমায় ভেবে ভেবে আমার কিছুটি হয় না, তোমায় যে আমি সত্তি সত্তি ভালোবেসেছি। আমার জীবনে একমাত্রই তুমি, আছো তুমি এ হৃদয়ের গহীনে নিঃশব্দ তোমার আসা-যাওয়া আমার মাঝে অনুভবে কবিতার ছন্দ তালে তোমায় ধরে রেখেছি।  আসো না একবার ছুটে- বলনা একটু - ”তোমায় ভালোবাসি”।।

আবেগী মনটা ভরে গেল .....




পাহাড়ি নৃত্যে আর দেশাত্মবোধক গানে অভিভাবকদের মনটা ভরে গেল। আমাদের সাথে যোগ দিয়েছিল বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর কলা-কুশলীগন। সবাই মুগ্ধ, দেশের রাজনৈতিক অবস্থা অস্থিতিশীল, তার মাঝেও। 

আগামী কাল অর্থাৎ কয়েক ঘন্টা পরেই বিজয় দিবস। প্রত্যেকের মাঝে বিজয়ের একটা আনন্দ। সেই সাথে জমাট সময়ের মধ্যে সুন্দর একটা অনুষ্ঠান উপভোগ করা। আমাদেরকে সবাই বলল এমন অনুষ্ঠান আবার কবে হবে! স্বাধীন দেশে বাস করেও পরাধীনতার মাঝে বাস করছি, মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারছিনা। যারা এই দেশটাকে রুপদান করলো, লক্ষ্য প্রাণের বিনিময়ে................................... আমাদের স্বাধীনতা আর সেইখানে রাজাকার, পাকিস্তানি চিন্তারূপী,র্ধষক-মিথ্যাচারী তাদের জন্য আমাদের অবরোধময় জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। আজ রাজাকারের ফাঁসির জন্য দেশে হরতাল, অবরোধ, খুন-যখম সমানে চলছে। ওদের কি রক্ত বুদবুদ করে না এই দেশটার জন্য??????

যে দেশ আমাদের মা! মায়ের সম্মান বাঁচানো উচিৎ প্রত্যেক সন্তানের। এমন করেই বলছিলেন সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় আসা অভিবাবকগন। 

কথাগুলি এতো আবেগময় ছিল যে চোখের জল রোধ করা সম্ভব ছিল না। সবাই আগামী কাল র‌্যালীতে বের হবো তার দৃঢ় অঙ্গীকার করা হলো। র‌্যালী শেষে অনুষ্ঠান আছে বিকালে সেগুলোর সময়সূচী বলা হলো সবাইকে। 


আমরা সবাই বিদায় নিয়ে বের হলাম। দেখলাম রাস্তায় কড়া নিরাপত্তা বসানো হয়েছে। আগামী কালের আয়োজনে যেন কোন বাঁধা না আসে পাকিস্তানী প্রেমী, রাজাকার ফাঁসির প্রতিরোধকারীদের কাছ থেকে। আমার সাথে মামা ছিলেন, বাসায় ফিরলাম একসাথে। মুহূর্তেই আমার হাতের ব্যাথাটা বেড়ে গেল। 

মায়ের সাথে দেখা করে আমার রুমে ফিরলাম। 






কিছুক্ষণ পর আমার মোবাইল বেজে উঠলো। ফোন রিসিভ করতেই মোবাইলের ওপাশ থেকে বলছে-

 “মা” কেমন আছ? আমি তোমার জন্য কান্না করছি। তুমি কোথায় এখন? তুমি কি তোমার রুমে আছ?আমি ওর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতেই লাইন কেটে গেল। সাথে সাথে আমি ফোন কল ব্যাক করলাম। আবার ও কথা বলতে শুরু করলো- “মা” কাল বিজয় দিবস, তুমি আমাকে নিয়ে যাবে না? আমি তোমার সাথে ঘুরবো, আমাকে অনেক কিছু কিনে দিবে। আমি চোখের পানি আটকাতে পারছিনা ওর কথা শুনে । নিজেকে সামলিয়ে ওকে বলছি- বাবা আমিও তোমাকে মিস করছি, তুমি কেমন আছ? তুমি কি খেয়েছো? ও সাথে সাথে আমার কথার উত্তর দেয়, আর বলে তুমি কি তোমার রুমে, আমি আসছি? আমি বললাম না বাবা আমি আমার বাবা-মায়ের বাড়ীতে আছি। ও তখন চুপসে গেল। তারপর ও বলল- তাহলে তুমি আসনি(ময়মনসিংহে)? কবে আসবা, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি ওকে শান্ত করে বললাম- তোমার মাকে ফোনটা দাও। ও বলল- না, তুমি ছোঁয়া আপুর সাথে কথা বল।

ছোঁয়ার সাথে কথা হলো। ছোঁয়াও স্বপ্নীলের মত করে কথা বলা শুরু করলো। পরে ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম আমি খুব শীঘ্রই তোমাদের সাথে দেখা করবো। এই কথাগুলো বলে ছোঁয়াকে বললাম-এখন মামনিকে ফোনটা দাও। সে তার মাকে ফোন দিবে না, সে আরও কথা বলতে চাই। এদিকে স্বপ্নীল সেও কথা বলবে। ওদের কান্ড দেখে ওদের আম্মু ফোনটা নিয়ে আমার সাথে কথা বলা শুরু করলো। 


আমি ভাবীকে বললাম- কেমন আছেন? সে তখন ভালো অবস্থার কথা বলে শুরু করলো ছোঁয়া আর স্বপ্নীলের কথা। স্বপ্নীল আমার সাথে কথা বলার জন্য পাগল হয়ে আছে। সে নির্দিষ্ট নম্বরে কল সেন্ড করতে পারে না, আমার সাথে কথা বলার জন্য যেখানে সেখানে কল করছে, পরে ভাবী ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আমার নম্বরে ফোন করে স্বপ্নীলের হাতে ধরিয়ে দেয়। স্বপ্নীল আমার হ্যালো শুনেই ওর মনের কথা বলতে থাকে। ভাবী আমাকে বলল বাসায় আসতে। আমি বললাম- সময় হলে আসব একদিন। ভাবীকে বললাম- “ মা” ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, তাই মায়ের পাশেই আছি, বাবা-মাকে দেখার কেউ নাই। এখন কিছুটা সুস্থ আছে আগের তুলনায়। আমি ভাবীকে আসতে বললাম বাসায়। সে বলল আচ্ছা ঢাকায় আসেন তখন না হয় দেখা করবো। এরপর কথা শেষে ফোনটা রেখে দিলাম। 


আমার এখন স্বপ্নীলের কথা মনে পড়ছে। ওর কথাগুলো কানের ভেতর সূচের মত বিধছে। স্বপ্নীল আমাকে মা বলেই ডাকে যখন আমি ময়মনসিংহ বি.এল. সিতে জয়েন্ট করি তখন থেকেই। বি.এল.সিতে কেউ আসলে আমার সাথে ওকে দেখে সবাই জিজ্ঞেস করতো - আমি কি হই স্বপ্নীলের কাছে? স্বপ্নীল বলতো- আমার মা। আমিও বলতাম আমার ছেলে। স্বপ্নীলের বয়স ৩ বছর ৩ মাস।


আমি চাকরিতে ২০১৩ সালের ১৩ই জানুয়ারি , ময়মনসিংহ বি.এল.সিতে ফেকাল্টি মেম্বার হিসেবে জয়েন্ট করি। ঢাকা থেকে ৩ ঘন্টার দূরত্ব। প্রত্যেক সপ্তাহে ঢাকায় ছুটতাম। পরে একটা সময় ঢাকাতে মাসে ১ বার, এরপর ২ মাসে ১ বার যেতাম। ততোদিনে স্বপ্নীল আমার প্রতিটা মুর্হূত জুড়ে থাকতো। অফিস শেষে ও আমার কাছে চলে আসতো। আর রাতে ১১টার দিকে ওর বাবা-মাযের কাছে ফিরতো। সকালে আমাকে ৫টা৩০মিনিটে উঠতে হতো চাকরীর নিয়মানুযায়ী। ৮টার সময় স্বপ্নীল আমার রুমে চলে আসতো । সে আমার সাথে নাস্তা করার জন্য।এভাবে সে আমার পিছু ছাড়তো না। আমার কাছে আসা নিয়ে প্রথম দিকে ওর বাবা-মা আটকালেও পরে আর বাঁধা দেয় নি। রাতে সে আমার কাছে ঘুমাবে কিন্তু আমি ওকে কোলে করে ওর মায়ের কাছে দিয়ে আসতাম, ওদের বাসায় গেলে ও তাড়াতাড়ি করে ড্রইং রুমের দরজা লাগিয়ে দিত যাতে আমি চলে না যায়। তারপর ওর পছন্দের খেলনা আমাকে দেখাতো। আমি আর লিখতে পারছি না।  


স্বপ্নীল ছিল, আমি চাকরিতে থাকাকালীন ইন-র্চাজের ছেলে। আজ চাকরি করি না কিন্তু ওর প্রতি আমার আবেগ সম্পূর্ণটাই আছে। স্বপ্নীলের কথা অন্যদিন লিখবো। হাতের ব্যাথাটা বাড়ছে। আমার ঘুমানো উচিৎ। কাল সকালে উঠতে হবে।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুবই লোমহর্ষক

তোমায় ছাড়া কিছু ভালো লাগে না আমার

পরীক্ষা শেষে বাসায় ফেরা...!!!

আমি এমনিতেই তোমাকে ফোন করেছি,সত্যি বলছি, আমি ঘুমের মাঝে নেই।

কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি